বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, কোটা আন্দোলনে প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, প্রতিটি গুলির বিচার হবে। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা হুকুমের আসামি তাদেরও বিচার হবে। তিনি ১৬ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার জড়াকুড়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সারদুল আশিস সৌরভের কবর জিয়ারতের পর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ঢাকায় মামলা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক আদালতেও তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এসব হত্যাকারী কাউকে আর কখনো ছাড়া হবে না। শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার যে দোসররা নির্দেশ দিয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছে তাদেরকেও এ বিচারের আওতায় আনা হবে।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, তারেক জিয়ার নির্দেশে আমরা প্রতিদিনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের কবর জিয়ারত করছি, তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করছি। এখানে যেতে যেতে, এত এত লাশ দেখে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো না। এতো লাশ, এতো আহাজারি এটা আমাদের মনকে আসলে অন্যরকম করে দিয়েছে। তাদেরকে সমবেদনা জানানোর ভাষা খুঁজে পাই না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের পাশে থাকা আশ্বাস দিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব এবং ইনশাল্লাহ আমরা যদি জনগণের সমর্থনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে এসব শহিদদের স্মৃতির রক্ষার জন্যে প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে স্মৃতিস্তম্ভ হবে, একটি করে রাস্তা বা সরকারি স্থাপনার নামকরণ করা হবে। তাদের পরিবারের মধ্য থেকে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে একটা চাকরির বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি এসব হত্যাকাণ্ডের যেন বিচার হয়, সেজন্য এখন থেকেই তৎপরতা শুরু করেছি। আমাদের যে লিগ্যাল এইড কমিটি গুলো রয়েছে, জেলা আইনজীবী ফোরাম রয়েছে, আমাদের জেলা নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিহত পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মামলাগুলো সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে তৈরী করার জন্য। যাতে তারা ন্যায় বিচারটা পায়।
ওইসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী, জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল আওয়াল চৌধুরী, ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) আলহাজ্ব শাহজাহান আকন্দ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আব্দুল মান্নানসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর বিএনপি নেতৃবৃন্দ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গাজীপুরে নিহত ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের শালচূড়া গ্রামের শাহাদাত হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম আলহাজের কবর জিয়ারত শেষে পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এর আগে ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইকুড়া বাজারে এক পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী।