পৌষের মাঝামাঝি সময়ে পঞ্চগড়ে কনকনে শীত অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। উত্তরের হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশায় জেলার জনজীবন ও প্রকৃতি যেন জমাট হয়ে আসে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আদ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৬ শতাংশ। তিন ঘণ্টা আগে, সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সহকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সকালে উঠে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে চারপাশ আর তীব্র শীতের ভোগান্তিতে পড়েছেন পঞ্চগড়ের খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ। এর সঙ্গে বয়ে চলা উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন সড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। কিছু কিছু যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। তবে কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে সাত সকালেই বের হন শ্রমজীবী মানুষেরা।
মিজানুর রহমান নামের এক পাথর শ্রমিক বলেন, প্রতিদিন সকালে বরফ গলা ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর উত্তোলন করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আজকে মনে হচ্ছে তীব্র শীতে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। যেন বরফ পড়ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। পরিবারের কথা চিন্তা করেই বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়।
এদিকে, হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে জেলায়। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও ঘন কুয়াশার দাপটে উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে দুদিন ধরে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হয়েছে। তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। প্রতিনিয়তই সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, হিমালয়ের কাছে হওয়ায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতার পরিমাণ ৯৬ শতাংশ ছিল। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।