গাজীপুরের টঙ্গীতে ইজতেমার ময়দানে জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থীদের সংঘর্ষের পর প্রশানের নির্দেশ মতো ময়দান ছেড়ে গেছেন মুসল্লিরা। বর্তমানে পুরো ময়দান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল। বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকাল গাজীপুর মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ইজতেমা ময়দান ঘিরে ১৪৪ ধারার জারির পর বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ বেশিরভাগ মুসল্লি চলে গেছেন। তবে আসবাবপত্রের নিরাপত্তার জন্য কিছু মুসল্লি এখনো ময়দানের ভেতরে অবস্থান করছেন।
বুধবার ভোররাত তিনটার দিকে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মাঠে আগে থেকেই অবস্থান করা জুবায়েরপন্থীদের ওপর সাদপন্থীদের হামলার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু ছাড়াও শতাধিক আহত হন। পরে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা ত্যাগের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ পৃথক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে।
এদিকে ওই সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনায় দুই পক্ষের কেউ এখনো মামলা করেনি।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে জুবায়ের অনুসারী ও সাদ অনুসারীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে ইজতেমার ময়দানে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। দুই গ্রুপের মুসল্লিরা ময়দান ছেড়ে দেওয়ার পর ইজতেমা মাঠ এখন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ময়দানের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।
বুধবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে বলা হয়, বেলা দুইটা থেকে ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রে ঘোরাফেরা, জমায়েত বা মিছিল-সমাবেশ করতে পারবেন না। কোনো ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, ছুরি, লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এ জাতীয় কোনো পদার্থ বহন করতে পারবেন না। কোনো প্রকার লাউড স্পিকার বা এ জাতীয় কোনো যন্ত্র দ্বারা উচ্চস্বরে শব্দ করতে পারবেন না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে বুধবার দুপুর ২টা থেকে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় যেকোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ ইত্যাদি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।