শেরপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে জেলা বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ওই মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান। সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ব্যবসা হলো হালাল উপার্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম। ব্যবসায় মুনাফা থাকবে, তবে তা যেন যৌক্তিক পর্যায়ে হয়, সেটা ভাবনায় রাখতে হবে। সেজন্য আমাদের সবাইকে নৈতকতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ নয়, কিভাবে বাজার পরিস্থিতি সহনীয় থাকে, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা যায়, সেই বিষয়টি সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই এই মতবিনিময় সভা।
মতবিনিময় সভায় নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও বিভিন্ন দ্রব্যের বাজার মুল্য তুলে ধরেন কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন। তিনি জানান, বর্তমানে খুচরা বাজারে ডিম, আলু, আদা, পো্িট্র মুরগীর দাম অনেকটা সহনশীল। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ডিমের হালি (৪টি) বিক্রী হয়েছে ৫৬ টাকা থেকে ৫৮ টাকা দরে। কিন্তু এখন সেটা কমে হালি ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। আদা বিক্রী হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। তবে পেঁয়াজের দাম গতকাল থেকে বেড়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৩/৪ টাকা বেড়ে বিত্রী হচ্ছে ১২৪ টাকা থেকে ১২৮ টাকা দরে। আর কাঁচা মরিচের পাইকারী বাজারে দাম সহনীয় হলেও এখনও খুচরা বাজারে কিছুটা অস্থিতিশীল রয়েছে। কোথাও কোথাও ৩৪০ টাকা কেজি থেকে ৪০০ টাকা কেজি দামে বিক্রী হতে দেখা যাচ্ছে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন।
এদিকে, সভায় ডিম উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, মুরগীর খাবার এবং বাচ্চার দাম বড় বড় কোম্পানীগুলো সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সিন্ডিকেটের চড়ামূল্যের কারণে ডিমের বাজারেও এর প্রভাব পড়ে। তাছাড়া আমাদের জেলায় বন্যার কারণে অনেক খামার নষ্ট হওয়ায় স্থানীয়ভাবে ডিমের উৎপাদন যেমন কমেছে, তেমনি সবজির অনেক আবাদ নষ্ট হওয়ায় ডিমের চাহিদাও বেড়েছে। যে কারণে ডিমের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহের তুলনায় সরকারীভাবে ডিমের মুল্য নির্ধারণের ফলে এখন ডিমের দাম অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। সভার সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ নিত্যপণের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কৃষক/উৎপাদকের নিকট থেকে সরাসরি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য খোলাবাজার ব্যবস্থা চালুর ফলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীর দৌরাত্ম কমতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
সভায় টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যসচিব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ডা. ফজলুর রহমান, ক্যাব সাধারণ সম্পাদক হাকিম বাবুল, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জুবায়দুল আলমসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও খামারিরা বক্তব্য রাখেন।
