ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ছয়জন নির্মাণ শ্রমিক ও একজন চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে গান্দেরবাল জেলায় এই হামলা হয়। নিহতরা একটি টানেল নির্মাণ প্রকল্পে নিযুক্ত ছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা নির্মাণকর্মীদের ক্যাম্পে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ঘটনার পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। হামলাকারীদের ধরতে এলাকাজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের তথ্যমতে, ক্যাম্পে স্থানীয় ও অভিবাসী উভয় ধরনের শ্রমিকেরা ছিলেন। কমপক্ষে দুজন সন্ত্রাসী গুলি চালায়।
হামলাকারীরা কোম্পানির দুটি যানবাহন পুড়িয়ে দেয়। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে একটি ইনসাস রাইফেল ফেলে গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলার পর থেকে ঘটনাস্থলে প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে এবং তল্লাশি চলমান থাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের হামলার স্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
নবনির্বাচিত জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই হামলাকে ‘নিন্দনীয় ও কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এই মানুষগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পে কাজ করছিলেন। আমি এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেছেন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। যারা এই ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তাদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা হবে না।
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিরীহ মানুষকে হত্যা ও সন্ত্রাস ছড়ানোর এমন কর্মকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
জম্মু-কাশ্মীরে নতুন সরকার গঠনের কয়েকদিনের মধ্যেই অঞ্চলটিতে প্রাণঘাতী এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওমর আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেসের জোট নির্বাচনে জয়ী হয়ে সম্প্রতি সরকার গঠন করেছে।
এবারের নির্বাচন জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কারণ ২০১৪ সালের পর সেখানে এই প্রথমবার নির্বাচন হলো। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর থেকেও অঞ্চলটিতে এটাই ছিল প্রথম নির্বাচন।