রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৪৮ রান করে পাকিস্তান। জবাবে চতুর্থ দিনে মুশফিকুর রহিমের দেড়শোতে লিড নিয়ে থাকে বাংলাদেশ। তবে শতকের উদযাপন করতে পারলেও ৯ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি মিস করেছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। এরপর লিড বড় করার কাজটা সারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ৫৬৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। তাতে ৪ ফিফটি আর এক শতকে ভর দিয়ে পাকিস্তানের ৪৪৮ রানের বাধা টপকে ১১৭ রানের লিড নিয়ে থাকে টাইগাররা।
৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৬ রান নিয়ে গতকাল রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। অপরাজিত দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাস আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেন। দিনের শুরুতে মোহাম্মদ আলির ওভারে বল মুশফিকের পায়ে লাগলে লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন করে পাকিস্তান, আম্পায়ারও আঙুল তুলেছিলেন, তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মুশফিক। তবে মুশফিক বাচলেও এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি লিটন।
আজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই মুশফিক-লিটন জুটি শতরান পূরণ করে। তবে চতুর্থ দিনে স্কোরবোর্ডে ১৬ রান যোগ করতেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেছেন ৫৬ রান। লিটন আউট হওয়ার পর ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন মিরাজ। অভিজ্ঞ মুশি পাকিস্তানি বলারদের পরীক্ষা উত্তরে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে সাবলীল ভাবে রান তুলেন। একই সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতকও পূরণ করেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
মধ্যাহ্নবিরতিতে যাওয়ার আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। বাংলাদেশের ইনিংসে ১১৬তম ওভারে দুই রান নিয়ে শতক স্পর্শ করেন মুশফিকুর। তাতে রচনা হয় নতুন ইতিহাস। দেশের বাইরে এখন তার সেঞ্চুরি পাঁচটি। আর তামিমের টেস্ট শতক চারটি। সব মিলিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে মুশফিকুরের সেঞ্চুরি এখন ১০টি। এর মধ্যে বিদেশের মাটিতে এই ইনিংস বাদে তার বাকি চারটি সেঞ্চুরি এসেছে শ্রীলঙ্কা, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডে।
সর্বোচ্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে ঠিক ২০০ রান করেছিলেন তিনি। এরপর ২০১৮ ও ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আরও দুবার এ কীর্তি গড়েন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। আজ ডাবল সেঞ্চুরির হালি পূরণের দিকেই এগোচ্ছিলেন মুশফিক।
কিন্তু আগের দিন সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়েন সাদমান, আজ খুব কাছে গিয়েও মুশফিকুর রহিম ছুঁতে পারেননি ডাবল শতক। ১১তম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১৯১ রান করে আউট হন এই দেশসেরা ব্যাটার। মোহাম্মদ আলির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন।
মুশফিকের বিদায়ের পর উইকেটে আসা হাসান মাহমুদ ১৮ বল মোকাবিলা করেও রানের দেখা পাননি। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তখনও দলকে টানতে থাকেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের ৭ম ফিফটি হাঁকানো মিরাজ অবশ্য ব্যক্তিগত ৭৭ রানে হারান উইকেট। ততক্ষণে বাংলাদেশ পেয়ে যায় ১০৯ রানের লিড। শেষ পর্যন্ত ৫৫৬ রানে টাইগাররা থামলে ১১৭ রানের লিড নিয়ে থাকে শান্ত-সাকিবরা।