সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আগামী চার সপ্তাহ পর বিষয়টি পরবর্তী শুনানি করার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
এর আগে সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে কোর্টের এজলাসে আসেন প্রধান বিচারপতিসহ ৫ বিচারপতি। শুনানির জন্য কার্যতালিকার ৪ নম্বরে থাকা মামলাটি ৯ টা ৫৩ মিনিটে শুনানির জন্য আসে। সে সময় আদালত বলেন, ‘সাড়ে ১১টার দিকে আসেন’।
এরপর আদালতের এজলাস ত্যাগ করেন আইনজীবীরা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এজলাসে আসেন বিচারপতিরা। ১১ টা ৪২ মিনিটে এজলাসে শুনানি করতে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন ওপর শুনানি করেন। স্টে অর্ডার চান আদালতের কাছে।
মঙ্গলবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন। আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির পর তাদের পক্ষে শুনানি করেন শাহ মঞ্জরুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টের আদেশ বাতিল চাচ্ছি’।
এরপর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মুনসুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা কোটা চাইনি। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা কোটা চায় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করে কোটা চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলা করা হয়েছে। হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে; সেটি বহাল রাখা হোক। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় বের হোক। সে পর্যন্ত রায় বহাল রাখা হোক। একটা জাজমেন্ট হয়ে গেছে। আন্দোলন যারা করছে; সেটাকে অ্যাপ্রিসিয়েট করা যায় না। রাস্তায় স্লোগান দিয়ে আদালতের রায় বন্ধ করা যাবে না। আন্দোলনকারীদের উসকে দেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের ভুল বুঝানো হচ্ছে। টেলিভিশনে অনেকেই কথা বলছেন। শিক্ষকদের উচিত তাদের বুঝানো।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত নয়, তারা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে ওই আবেদন করেছেন। এই শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিল নয়, সংস্কার চান বলে জানান রিটকারীর আইনজীবী।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থাগিত চেয়ে এফিডেভিট দায়েরের জন্য ওই দুই শিক্ষার্থী আবেদন করলে চেম্বার আদালতের বিচারপতি মোহাম্মদ আশফাকুল ইসলাম এফিডেভিট দাখিলের জন্য অনুমতি দেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন দায়ের করা হয়।
আবেদনকারী শিক্ষার্থী হলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আলসাদি ভূঁইয়া এবং আহনাফ সাঈদ খান।