শেরপুর প্রতিদিন ডট কম

Home খেলাধুলা স্বাগতিক জার্মানির হৃদয় ভেঙে সেমিফাইনালে স্পেন
স্বাগতিক জার্মানির হৃদয় ভেঙে সেমিফাইনালে স্পেন

স্বাগতিক জার্মানির হৃদয় ভেঙে সেমিফাইনালে স্পেন

স্বাগতিক কোনো দলকে নকআউট ম্যাচে না হারানোর তিক্ত এক রেকর্ড নিয়ে জার্মানির স্টুটগার্ডে হাজির হয়েছিল স্পেন। আর জার্মানি এসেছিল ঘরের মাঠের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে। বারেবারে বদলালো সেই ম্যাচের রং। ৫০ মিনিটে গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। এরপর শেষ সময়ের গোলে জার্মানি ফেরে সমতায়।
কিন্তু ফ্লোরিয়ান ভির্টজের দুর্দান্ত সেই গোলটা ম্লান হয়ে গেল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে এসে। ঘড়ির কাটায় সময় যখন ১১৯ মিনিট, তখনই আবার স্কোরশিটে পরিবর্তন। সেই দানি ওলমোর অবদান মিশে থাকল এবারেও। দুর্দান্ত এক ক্রস। আর তাতে মাথা ছুঁয়ে গোল পেলেন মিকেল মোরেনো।
স্পেনের ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় গোল। তাতেই দলকে নিয়ে গেলেন ইউরোর সেমিফাইনালে। ২-১ গোলের জয়ে আরও একবার জার্মানির হৃদয় ভাঙল স্প্যানিশরা৷
এর আগে কখনোই ইউরোর ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে গোল দেওয়া হয়নি স্পেনের। এমন এক সমীকরণ সামনে নিয়ে মাঠে নেমেছিল স্পেন। প্রথমার্ধে আক্রমণ আর প্রতি আক্রমণ দেখা গেলেও ন্যাচ ছড়ালো না উত্তাপ।
প্রথমার্ধের পাল্টাপাল্টি আক্রমণের পর দ্বিতীয়ার্ধের ৫০ মিনিটে এলো প্রথম গোল। ইয়ামালের নিরীহ দর্শন পাসটা ফাঁকাই পেয়েছিলেন দানি ওলমো। লেইট রান দিয়েছিলেন, জার্মানির মিডফিল্ড বা ডিফেন্সের কেউই মার্ক করেননি ওলমোকে। ফার্স্ট টাচ শটে পরাস্ত করলেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়াল নয়্যারকে।
অথচ এই দানি ওলমোকে শুরুতে রাখেননি কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। ম্যাচের ৭ মিনিটে টনি ক্রুসের ফাউলে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন পেদ্রি। এরপরই নামানো হয় ওলমোকে। শেষ পর্যন্ত ওলমোই স্পেনকে এনে দিলেন লিড।
ম্যাচের প্রথমার্ধটা দুই দলই পার করেছে নিজেদের পায়ে বল রাখার চেষ্টায়। আক্রমণের বেলায় দুই দলই কিছুটা হলেও ছিল ধীরগতির। প্রথমার্ধে বড় আক্রমণ খুব একটা দেখা যায়নি। এর মাঝেও অবশ্য এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ পেয়ে যায় স্পেন। ইয়ামালের ফ্রি-কিক আর ফ্যাবিয়ান রুইজের ডিবক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শট গোলবারের লক্ষ্যে না থাকলে বেড়ে যায় স্প্যানিশ দর্শকদের হতাশা।
জার্মানি বল দখলে এগিয়ে থাকলেও স্প্যানিশ গতির তুলনায় কিছুটা পিছিয়েই ছিল পুরোটা ম্যাচে। প্রথমার্ধে খুব বেশি বলার মতো সুযোগ ছিল না তাদের সামনে। তবু কাই হাভার্টজের ২১ মিনিটে পাওয়া সুযোগটা জার্মান ভক্তদের পোড়াতেই পারে।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের গতি ফেরে ৫০ মিনিটে দানি ওলমোর গোলের পরে। জার্মানির একের পর এক আক্রমণ ম্যাচে যোগ করেছিল বাড়তি উত্তেজনা। নিকোলাস ফুলক্রুগকে নামিয়েছিলেন কোচ নাগেলসম্যান। জার্মানিরও সম্ভাবনা বেড়েছিল তাতে।
ফুলক্রুগ ও হাভার্টজের জুটি এরপর বেশ খানিকটা সময় ভয় ধরায় স্পেনের ওপর। যদিও একের পর এক আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়ে স্পেনকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন গোলরক্ষক উনাই সিমন।
৭৬ মিনিটে ম্যাচে নিজেদের সেরা সুযোগ পেয়ে যায় জার্মানি। নিকোলাস ফুল্ক্রুগের মাটি কামড়ানো শট ফিরে আসে গোলবার থেকে। ৮০ মিনিটে ফাঁকা পোস্টে গোল মিস করেন হাভার্টজ।
এরপরই ৮৮ মিনিটে জার্মানি পায় নিজেদের কাঙ্ক্ষিত গোল। জটলার মাঝে জশুয়া কিমিখের হেড থেকে বল পেয়ে ভলিতে গোল করেন ফ্লোরিয়ান ভির্টজ। ম্যাচে ফেরে সমতা। ৯০ মিনিটের লড়াই শেষে জার্মানি-স্পেনের ম্যাচ ঠেকল অতিরিক্ত সময়ে।
সেখানেও প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রাখে স্বাগতিক জার্মানি। ফ্লোরিয়ান ভির্টজ আর জামাল মুসিয়ালা বারবার ঝড় তুলেছেন স্প্যানিশ ডিবক্সে। কিন্তু মার্ক কুকুরেয়া, দানি কার্ভাহালরা ঠেকিয়ে রেখেছিলেন দুই তরুণকে। আর সুযোগ বুঝে আক্রমণে উঠে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত গোলে ঠিকই জয় পেয়ে যায় স্পেন। ৩ বারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা আরও একবার চলে গেল শিরোপার আরও কাছে।


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × five =