শেরপুর বনাঞ্চলের বালিঝুড়ি রেঞ্জের সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারি বনায়ন প্রকল্পের অন্তত ১০ কোটি টাকার রাজস্ব গরমিল পেয়েছে বন বিভাগ।
বনের বাগান বিক্রি হলেও বিক্রির টাকা সরকারি হিসাবে জমা হয়নি। এর জন্য দায়ি করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বনের সদ্য বদলী হওয়া বন কর্মর্কর্তা (রেঞ্জ অফিসার) রবিউল ইসলামকে। অভিযোগ ওই বনায়ন প্রকল্পের টাকা মেরে দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। বাগান বিক্রির টাকার মধ্যে শতকরা ষাট ভাগ টাকা সরকারের রাজস্ব বাকি চল্লিশ ভাগ ওই প্রকল্পের সাথে জড়িত কয়েকশ উপকারভোগী পাহাড়ি গরীব মানুষ।
চার বছর রেঞ্জার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর গেল ২ ফেব্রোয়ারি তিনি জামালপুরে বদলী হন। এর আগের দুই বছর তিনি ওই রেঞ্জেই দুই বছর বিট কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বদলী হওয়ার পর বিষয়টি বন বিভাগের নজরে আসলে নড়ে চরে বসে বন বিভাগ। বন বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করে মাস খানেক আগে।
এইবিষয়ে তদন্তে পাঁচ সদস্য করে দুইটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করেছে বন বিভাগ। এ দিকে অংশীদারিত্বের টাকা খোয়া যাওয়ার আশংকায় আছেন উপকার ভোগি শতশত পাহাড়ের মানুষ। ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সরকারি ওই বন অফিসে সুবিধাভোগীরা দিনরাত ঘুরছে। তদন্ত কমিটিও আসছে ঘনঘন।
জানা গেছে, ওই কর্মকর্তার চাকরি কালিন সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারি বনায়নের দেড়শতাধিক বাগান অন্তত ১৬ কোটি টাকায় টেন্ডারে বিক্রি করা হয়। সরকারি আইন অনুযায়ি বাগান বিক্রিত অর্থ ঠিকাদার সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে গাছ কাটার অনাপত্তি পত্র নিয়ে বাগান কেটে নিবেন।
জমাকৃত টাকা থেকে বন কর্তৃপক্ষ অংশীদারি জনগকে যার যার অংশ বোঝিয়ে দিবে। ঠিকাদাররা বাগান কেটে নিয়ে গেছেন। কিন্ত সরকারি কোষাগারে টাকা জমা হয়নি। সূত্র জানিয়েছে ওই কর্মকর্তা ঠিকাদারের কাছে থেকে নির্ধারিত টাকা ব্যক্তিগত ভাবে জমা নিয়ে গাছ কাটার মৌখিক অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। কিন্ত সরকারি তহবিলে জমা দেননি।
অপর একটি সুত্র জানিয়েছে অভিযুক্ত রবিউল আলমঠিকাদার সিন্ডিগেটের একটি বড় অংশের সাথে গোপনে অংশীদার ছিলেন। ওই সিন্ডিগেটকে কাজ পাইয়ে দিয়ে মিলেমিশে সরকার ও প্রকল্পের অংশীদার সাধারনের টাকা তছরুপ করেছেন। এখানে চাকরি কালিন সরকারি দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে মহা দাপটে চাকরি করেছেন। কেউ তাতে আমাদের কি। আমাদের কষ্টের টাকাটা দিলেই আমারা খুশি।
অভিযুক্ত রেঞ্জার রবিউল ইসলাম কোন কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে দিয়েছেন। তারপর তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও তদন্ত কমিটির কথা স্বীকার করে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারি প্রধান বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেছেন টাকার গরমিল আছে।তবে তদন্তধীন বিষয় নিয়ে আর মন্তব্য করতে তিনি রাজি হননি।
Home ময়মনসিংহ বিভাগ শেরপুর জেলা শেরপুর বনায়ন প্রকল্পের ১০ কোটি টাকার রাজস্ব গরমিল, বন কর্মকর্তা বরখাস্ত