বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্য জুড়ে রয়েছে শুভ হালখাতা। নতুন বছরের ঋণ পরিশোধ করতে শেরপুর জেলায় কৃষি ব্যাংকের ১৬টি শাখায় এক যোগে শুভ হালখাতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টাকা দিতে কৃষকরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কৃষি ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে ১৬টি শাখায় টাকা উঠেছে মোট আট কোটি ৪৫ লাখ।
জানা গেছে, হালখাতার দিনকে কেন্দ্র করে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারি ব্যাংকের ঋণ গ্রাহকদের অতি বিনয়ের সঙ্গে টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানায়। কৃষকদের ধান কাটার সময় না হলেও ব্যাংকের অনুরোধে এই টাকা পরিশোধ করেছেন।
কৃষকরা জানিয়েছে, কষ্ট হলেও ব্যাংক কর্তাদের অনুরোধ রেখেছেন। কেউ ঋণের অর্ধেক কেউ ঋণের একটি অংশ নগদ হাতে নিয়ে ব্যাংকে হাজির হন। তবে ধান কাটা হলে অনেকেই সমোদয় টাকা পরিশোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।
হালখাতায় আসা সন্মানিত কৃষকদের ব্যাংক কর্তারা ছালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে চেয়ারে বসিয়ে প্রচণ্ড গরমে ঠান্ডা পানি, শরবত, মিষ্টান্ন ও ফলমুখ করিয়েছেন। ব্যাংকগুলোকে সাজানো হয় রঙিন কাগজ, নানা রঙের ঝালট দিয়ে। বাঙালির হালখাতা অত্যন্ত সোহার্দ্যপূর্ণ আলাপ আলোচনায় ঋণদাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে এই লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।
ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে ওই আদায়কৃত টাকার মধ্যে মন্দ বা কুঋণ আদায় হয়েছে তিন কোটি ৯৪ লাখ। আর নিয়মিত (মন্দ ঋণ হওয়ার পথে) ঋণ দাতারা পরিশোধ করেছেন চার কোটি ৪৮ লাখ। ঋণ আদায়ের মধ্যে এক কোটি ৪৮ টাকা আদায় করে প্রথম হয়েছে শেরপুর কৃষি ব্যাংক শাখা, এক কোটি দুই লাখ টাকা আদায় করে দ্বিতীয় হয়েছে ঝিনাইগাতি শাখা, ৮৬ লাখ টাকা আদায় করে তৃতীয় হয়েছে শ্রীবরদী ভায়াডাঙ্গা কৃষি ব্যাংক শাখা। তবে শীর্ষ আদায়কৃত ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকৃত ঋণের পরিমানও বেশি।
শেরপুর কৃষি ব্যাংকের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারি ও কৃষক জনপ্রতিনিধি সকলের প্রচেষ্ঠায় এই সফলতা। অসময়ে কৃষকরা যেভাবে সাড়া দিয়েছে তাতে আগামিতে কৃষি ব্যাংক আরও অনুপ্রাণিত হবে। ধান উঠার পর আবারও ঋণ পরিশোধ করতে নবান্নের হালখাতা অনুষ্ঠিত হবে এবং কৃষকদের প্রতি আবেদন জানানো হবে।