শেরপুর প্রতিদিন ডট কম

Home ময়মনসিংহ বিভাগ শেরপুর জেলা নকলায় সাংবাদিক রানার বিরুদ্ধে মানববন্ধন
নকলায় সাংবাদিক রানার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নকলায় সাংবাদিক রানার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

শেরপুরের নকলায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুরের সাথে অশোভন আচরণের প্রতিবাদে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে। ১১ মার্চ সোমবার সকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে ঢাকা-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নকলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নকলা শাখা, স্থানীয় সার ও বীজ ডিলার সমিতি, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখা, উপজেলা শ্রমিক ফেডারেশন ও নকলায় কর্মরত সাংবাদিকগণ যৌথভাবে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে। রানা ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার শেরপুরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা।
মানবন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ও ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী, সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুর, জেলা পরিষদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান সুজা, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সোহেল, সার ও বীজ ডিলার সমিতির সভাপতি জয়েন উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষনা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বিদ্যুৎ, দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, নকলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি খোরশেদ করিম শ্যামল, শ্রমিক নেতা ও পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জরিপ হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে চিরঋণী। তারা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমরা হয়তো পরাধীনতার শৃঙ্খল হতে মুক্ত হতে পারতাম না। সুতরাং একজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে অশোভন আচরণ করা মানে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অশোভন আচরণ করা। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রানাকে ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ কম হয়েছে। রানা একজন চাঁদাবাজ। সে কখনও সংবাদ মাধ্যমে খবর করেনা। তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে বিতর্কিত লেখা পোস্ট করে সে মানুষকে নানাভাবে হয়রানি। মানুষকে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইল করাই তার কাজ। নকলায় এমন হলুদ ও চাঁদাবাজ সাংবাদিকের প্রয়োজন নেই। আমরা সাংবাদিক রানার এহেন নেতিবাচক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমরা চাই সাংবাদিক রানার ইউএনও অফিসে সেদিনের প্রকৃত ঘটনা সাংবাদিকরা তুলে ধরুক।
মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্য, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুর জানান, ৫ মার্চ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি জরুরি কাজে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে যাই। ইউএনও তখন অফিসে সার্বিক মনিটরিং কমিটির মিটিং করছিলেন। ওইসময় পাশের কক্ষে হট্টগোলের শব্দ পাই। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি সাংবাদিক রানা সিএ শিলা আক্তারের সামনে চিৎকার, চেচামেচি ও শিলার সাথে অশালীন আচরণ করছে। আমি রানাকে থামাতে চেষ্টা করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ধাক্কা দেয় এবং অশোভন আচরণ করে। তখন ইউএনওর অফিসে জেলা পরিষদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ছিলেন। তিনিও রানাকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন। তখন ইউএনও নিরুপায় হয়ে অফিসের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রানাকে ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান, সাংবাদিক রানা তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছেন গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখে। ঘটনার দিন নতুন করে তথ্যের জন্য আবেদনের কোন বিষয় ছিল না। পূর্বের আবেদনের তথ্য তিনি সেদিন চেয়েছিলেন। আমি বলেছি তথ্যগুলো প্রস্তুত করছি। আমার হাতে তথ্য দেওয়ার জন্য আরও ২০ দিনের মত সময় আছে। কিন্তু রানা আমার কথা না শুনে অফিসে হট্টগোল করে অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত, সিএ শীলার কাছে থাকা তথ্যের ফাইল ধরে টানাটানি এবং তাকে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলেছেন। তিনি অসদাচরণ করেছেন। এতে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাই আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ডেকে পাঠিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রানাকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছি।


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen − eleven =