প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে ভারতে যাবেন বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) হাছান মাহমুদ নিজে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে আমাকে দিল্লি সফরের বিষয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা সময়টা দেখছি, কখন আমার জন্য এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সুবিধাজনক হয়। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা চাচ্ছি প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ভারত হবে। বহুপাক্ষিক সফরে আগামী ১৭ জানুয়ারি উগান্ডা সফরে যাবেন বলে জানান হাছান মাহমুদ।
ভারতীয় দূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। এরপরও আমরা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষত, আমরা কানেন্টিভিটি ইস্যুতে আলোচনা করেছি। বর্ডার হাট নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় রুপি এবং বাংলাদেশের টাকার বিনিময় সংক্রান্ত বাণিজ্য এটিকে সম্প্রসারণ করা। এটি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, এটাতে অল্প বিস্তর বাণিজ্য হয়েছে; এটিকে সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করা যায় সবার কাছে পরিচিত করা যায় এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
‘এটি জনপ্রিয় করা গেলে ডলারের ওপর বা অন্য কারেন্সির ওপর প্রভাব কমবে। আমাদেরও কমবে, ভারতেরও কমবে। বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সেটি সহায়ক হবে।’
সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় ড. হাছান মাহমুদকে। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর তার সঙ্গে এটি ছিল কোনো বিদেশি দূতের প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ।
দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পণ্য বহন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোট-খাটো কিছু বিষয় আছে সেগুলো হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে রামগড় ও আখাউড়া দিয়ে পণ্যের পরিবহন স্থিতিশীল হবে।
নির্বাচন নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ এবং নিরপেক্ষ জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল। সব কিছু ছাপিয়ে ভালো এবং উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত আমাদের পাশে ছিল, আছে। ১৪, ১৮ নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে ভারত আমাদের পাশে ছিল। এবারও গণতন্ত্র রক্ষায় ভারতের অবস্থান কি ছিল আপনারা জানেন।
চীনের প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প এবং কমপ্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ (সেপা) নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়নি। সেপা নিয়ে আজকে সেভাবে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে আমাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, যারা রাজনীতি করে না, যারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করে তাদের সঙ্গে তো আলোচনার কোনো কারণ নেই।