মেহেদী হাসান শামীম, স্ট্যাফ রিপোর্টার: ইন্দোনেশিয়ার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নেগেরি মাকাসার ভাষা ও সাহিত্য অনুষদ, ইংরেজি ভাষা শিক্ষা অধ্যয়ন প্রোগ্রাম’ এ স্নাতক শ্রেণির টেক্সট বুক ‘Business & Love’ এ ফাতিমা হিদায়াহ্নি আমিন এবং তার বন্ধুদের লেখাসহ মোট ৫২টি কবিতা অন্তরভুক্ত হয়েছে সম্প্রতি।বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত প্রকাশনা সংস্থা ‘অনন্ত বিদ্যা’ থেকে অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুরী’র সম্পদনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রণিতে পাঠ্য হয়। কবি হাসান নাশিদ শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার উত্তর শ্রীবরদী গ্রামের মাওলানা হাফিজ উদ্দিন মাস্টারের জ্যেষ্ঠপুত্র। তিনি একাধারে কবি ও গবেষক। ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর তার লেখা ‘সাম্প্রদায়িক’ কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ ‘Communal’ অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই কবিতার লেখক হাসান নাশিদ সূত্রে জানাগেছে, “Business & Love” হচ্ছে-কবিতার একটি মনোমুগ্ধকর সংকলন যা মানুষের অভিজ্ঞতার দুটি সবচেয়ে মৌলিক দিক জটিল এবং সংক্ষিপ্ত সম্পর্ক নিয়ে কথা বলে ৷ ভাষা এবং চিত্রের অদ্ভুত শক্তির মাধ্যমে, এই সংকলনটি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন, ভারত, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা ও মালয়েশিয়ার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাবান এবং খ্যাতিমান কবিদের কাব্যিক প্রতিভাকে একত্রিত করে, প্রেম, স্নেহ, আবেগ, সম্পর্ক এবং ব্যবসার জগতের সাথে তাদের জটিল আন্তঃক্রিয়ার বিষয়গুলি বাণিজ্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং সাফল্যেকে ধারণ করে। যা নতুন প্রেমের আনন্দ থেকে শুরু করে ব্যর্থ সম্পর্কে গড়ে উঠা হৃদয় ভাঙা ও কর্পোরেট উচ্চাকাঙ্ক্ষার গলা কাটা জগতের প্রত্যেক মুহুর্তের শান্ত সৌন্দর্য। এই সংকলনের কবিতাগুলি তার সমস্ত জটিলতায় মানব অবস্থার একটি আকর্ষণীয় এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ বাহ্যিক রূপ। জীবন ও জগতের গতিশীলতার নতুন পথ খুঁজে পেতে এমন একজন ব্যবসায়িক পেশাদার, অনুপ্রেরণা এবং তাদের মধ্যে একটি সংযোগের অনুসন্ধানমূলক কবিতা উৎস। ব্যবসা এবং প্রেমের সম্পর্কের মৌলিক অর্থের একটি রেফারেন্স পেতে চাইলে আপনি যেমনই হোক না কেন, কবিতার ঐতিহাসিক রূপান্তরকারী শক্তি অনুভব করতে “Business & Love” অবশ্যই- পড়া দরকার। কবি হাসান নাশিদ সেই ছোটবেলা থেকে লেখালেখি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে যোগদানের পর থেকেই গবেষণার সাথে জড়িত। এ পর্যন্ত কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলনে গবেষণার সারাংশ এবং কোরিয়ান একাডেমি থেকে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এখন তিনি উচ্চতর গবেষণায় ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং গাম্বিয়া সহ প্রায় অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর একাধিক এমএ ডিগ্রী এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল করছেন। এবিষয়ে লেখক ও গবেষক হাসান নাশিদ জানায়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কবিতাটি অন্তরভুক্ত পাঁচ মাস হলোও আমি অনেক পরে জানতে পেরেছি। ইউনিভার্সিটি নেগেরি মাকাসার, ভাষা ও সাহিত্য অনুষদ, ইংরেজি ভাষা শিক্ষা অধ্যয়ন প্রোগ্রাম-এর টেক্সট বুক ‘Business & Love’ এ আমার ‘সাম্প্রদায়িক’ কবিতাটি ইংরেজি ‘Communal’ নামে জায়গা পেয়েছে। আমার কবিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হবে এটা স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়, কিন্তু কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেনে সত্যি অবাক না হয়ে থাকতে পারিনি। এই অর্জন শেরপুরবাসিকে উৎসর্গ করলাম, কারণ এই ভূমি আমাকে এই কবিতা লেখার শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে।
মূল কবিতা-
কে বলে তোমায় ভোটার বন্ধু, কে চায় তোমার ভোট?
আশে-পাশে দেখো নেতাজী তোমার, ভোটে আছে কতো মোট!লুটেরা এখন লুটে নেয় সব, লুটে নেয় অধিকার!
সারাদেশ জুড়ে রাবণ-দোসর, রাজনীতি সুবিধার!
জনগণ! নাকি প্রধানমন্ত্রী বলো?
কার অধিকার কেন কেড়ে নেয় কার যে স্বার্থ হলো!
কোন সে স্বার্থ! জন্মদাতার দেশের অর্থ-কড়ি?
ধর্মরাজের গদার শাসন, শনির কর্ম-অরি?
যত বড় নয় তত বড় তার স্বার্থে নিগূঢ় কাজ, সাম্যবাদীর চোর-ডাকাতে অমানুষ দাগাবাজ! লালন শাহের খাঁচার ভিতর বন্দী অচিন পাখি,
সন্ত্রাসিদের লালন-পালন ভাসানচরের আঁখি!
সাম্প্রদায়িক জঙ্গী এখন মন্দিরে দেয় হানা.
জামাত-শিবির নাম বেচে খায় পাকিস্তানের ছানা।
আমলারা সব কীট-পায়খানা-মলের খাবার মুখ,
এক টাকা যার দুর্নীতি হয় কূটনীতি তার সুখ!
শিক্ষা-দীক্ষা নেই তো বালাই অশুদ্ধতায় ভরা.
মাজার-পূজায় আইন পাশের হুকুম যেমন কড়া!
তেমন একটা রাষ্ট্রধর্ম কেমন আমরা চাই?
যার অপমান নেই অপরাধ কুরান-পুরান ভাই!
জেগে উঠো মুসলিম.
জেগে উঠো শের শাহিন-সাধক কোথায় অর্জুন-ভীম?
কোথায় উমার-হায়দার-আলী কোথায় তোঁমার বীর?
কোথায় তোঁমার খলজিরা সব যাঁদের ভূষণ শির?
যাঁদের ঈমান অলঙ্করন শত্রুসেনার খুনে,
তাঁদের এখন লক্ষ্য উদয় অরুণ-বরুণ গুণে!
জগৎ যখন শয়তান দ্বারা আইন ভঙ্গকরে,
শাস্তি তখন করবে বরণ দীর্ঘসময় ধরে!