বিতর্কের জেরে পিছু হটল পাকিস্তানের উচ্চ শিক্ষা কমিশন (এইচইসি)। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দেশটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোলি খেলা নিষিদ্ধ করার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। গত মঙ্গলবার (২০ জুন) এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এইচইসি জানিয়েছিল, পাকিস্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোলি খেলা নিষিদ্ধ। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়। দেশটির কয়েকজন নেতাও এতে আপত্তি জানান। এরপরই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা হলো।
বৃহস্পতিবার এইচইসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শায়েস্তা সোহেল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, পাকিস্তানের উচ্চ শিক্ষা কমিশন ধর্মীয় বিশ্বাস, উৎসব এবং সব ধর্মকে সম্মান করে। আমরা এটা স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে, কারো ভাবাবেগে আঘাত করা হবে না। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হোলি খেলা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না।
সম্প্রতি ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের হোলি খেলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ‘মেহরান স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। ‘পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় হোলি উদ্যাপন’ বলে প্রচারও করেছিল তারা।
ওই ভিডিওতে অনেকেই মন্তব্য করেন, এই বহুত্ববাদী সংস্কৃতিই কায়েদ-ই-আজম চেয়েছিলেন। বিভাজন-জর্জরিত সময়ে এই রকম দৃষ্টান্তই তুলে ধরা উচিত। অবশেষে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তারপরেই হোলি খেলা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসে।
এই বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে সরব হয়েছিলেন পাকিস্তানের নেতাদের একাংশ। দেশটির শিক্ষামন্ত্রী রানা তনবীরকে হুঁশিয়ারি দেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা এবং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সদস্য খেয়ালদাস কোহিস্তানি।
টুইটারে তিনি লেখেন, রানা তনবীর সাহেব, হোলি রঙের উৎসব। ভালবাসা ছড়ানো হয়। কায়েদ-ই-আজম পাকিস্তানে সব ধর্মকে সম্মান করার কথা জানিয়েছেন। হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করতেই কী এই বিজ্ঞপ্তি? নওয়াজ শরিফও হোলি উদ্যাপন করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের হিন্দু সংসদ সদস্য রমেশ কুমারও। বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।