শেরপুর প্রতিদিন ডট কম

Home ময়মনসিংহ বিভাগ শেরপুর জেলা কোরবানির হাট কাঁপাতে শেরপুরের হাটে আসছে ‘কালু মামা’
কোরবানির হাট কাঁপাতে শেরপুরের হাটে আসছে ‘কালু মামা’

কোরবানির হাট কাঁপাতে শেরপুরের হাটে আসছে ‘কালু মামা’

শেরপুর প্রতিনিধি: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন আলোচনার মূল বিষয় বড় আকারের ষাঁড় গরু।
শেরপুরের কালু মামার আকৃতি ও সৌন্দর্য নজর কেড়েছে সবার। গরুর মালিকের
দাবি, এটিই শেরপুরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু। কেউ কেনার আশায় দেখতে আসছেন,
আবার অনেকে শুধু এত বড় ষাঁড়টি সামনাসামনি দেখার জন্যই আসছেন।

২২ মনের কালু মামার মালিক শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর
ইসলাম। তিনি পেশায় গাড়ী ড্রাইভার। গাড়ী চালিয়ে আয় করে লালন পালন করেছেন
কালু মামাকে। কালো মিচমিচে গায়ের রং, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট।

খামারি বাহাদুর জানান, আমি পাবনা করোনার সময় ঘুরতে গেছিলাম। সেখানে গরু
গুলা অনেক বড় সাইজের হয়। তাই সেখান থেকে একটা গরু নেওয়ার খুব ইচ্ছে জাগে
আমার। পরে আমার এক বড় ভাই আর বন্ধুর সাথে কথা বলে পাবনা থেকে একটা
হলস্টেইন জাতের ষাড় গরু কিনি ৮৫ হাজার টাকায়। সেখান থেকে বাড়িতে আনতে খরচ
হয় ১লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় ২ বছর ধরে গরুটি লালনপালন করতে গিয়ে মায়া
জন্মেছে। প্রতিদিন এর পিছনে একজন লোকের খাটাখাটনি আছে। আর ৬-৭শ টাকার
প্রতিদিন খাবার খায়। গোসল দিতে হয় ২-৩ বেলা। আমার এখন পর্যন্ত তার পিছনে
খরচই হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তাহলে কেনা খরচ সহ পরলো ৫ লাখ টাকা। আমি এখন কালু
মামাকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য
মানুষ আসছে দরদাম করতেছে। এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হয়েছে।
উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করবো।

কালু মামার মালিক বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতির খাবার খাইয়ে লালন পালন
করা হয়েছে তাকে। ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং
ধানের খড় খাইয়ের বড় করেছি ষাঁড়টিকে। সাথে আরও বিভিন্ন রকমের ফল খাওয়ায়ছি।
এটি আমার আদরের গরু। তাই যখন যা হাতের কাছে পাইছি তাই খাওয়ায়ছি। আর কালু
মামার সবচেয়ে পছন্দের খাওয়া আঙ্গুর ফল। তাকে অনেক আঙ্গুর খাওয়ায়ছি।

ষাড় গরুটি কালু মামা রাখার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এই
গরুটি আমার বন্ধুর মামা কিনে দিয়েছিলো পছন্দ করে। আর ষাড়টির রং হলো কালো।
তাই দুই মিলে নাম রেখেছি কালু মামা।

খামারি বাহাদুরের কাকা রহমত বলেন, গরুটা খুব শখ কইরা পালছে। সবারই এই
গরুর প্রতি মায়া জন্মে গেছে। একটা সন্তানকে যেভাবে লালনপালন করে কালু
মামাকেও এভাবে পালছে। আমরাও গরুটাকে এসে দেখি। খুবই ভালো লাগে। সামনে
কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করে দিতে হবে। বিক্রি হলে খুব কষ্ট হবে তবুও
বিক্রি করে দিতে হবে।

বাহারি নামের বিরাট আকারের এই ষাঁড় নিয়ে উৎসাহী আশপাশের এলাকার মানুষ।
শহর থেকে দেখতে আসা মো. জিহাদ বলেন, ‘আমি কখনও এত বড় ষাঁড় দেখিনি। শহরের
মধ্যেই এতবড় ষাঁড় পালছে এইটা ফেইসবুকে দেখে বাস্তবে দেখতে আসলাম। তাই
একটা সেলফিও নিলাম। সদরের চরশেরপুর থেকে আসা রফিক বলেন, ‘সব সময় টিভিতে
দেখি, বড় বড় গরু কোরবানির হাটে ওঠে। আজ বাস্তবে দেখলাম।’

গরু দেখতে আসা হুমায়ুন বলেন, আমার বাড়ি পাশের গ্রামেই। আমি আগে কখনও এত
বড় গরু দেখিনি। তাই লোকজনের কাছে শুনে দেখতে আসছি। গরুটি দেখতে অনেক বড়।
দেখতেও সুন্দর। নাম আর গরুর চেহারায় অনেক মিল আছে।

বড় ষাঁড় গরুর কথা শুনে দরদাম করতে আসছে পাইকাররা।

গরুর পাইকার হাসান বেলাল জানান, ষাঁড় গরুটি দেখতে বড়ই। আমি কেনার জন্য
আসছি। দেখতেছি। দরদাম করে যদি নিতে পারি তাহলে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করবো।

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলায়
অনেক খামারি এমন গরু কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু
বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর যে বাজার রয়েছে এতে খামারিরা বেশ লাভবান
হবেন।প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা
করা হয়। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ করে বেশ লাভবান
হচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানীর হাট বসবে। পাশপাশি ৫টি
অনলাইন প্লাটফর্ম থাকবে। প্রতিটা হাটে প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে
একটি করে ভ্যাটেনারি টিম নিয়োজিত থাকবে।


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

two + 16 =