স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুরের নকলা থানায় রুজুকৃত চাঞ্চল্যকর ৭ মামলার আসামী মুনছুর আলী ফকির (৩৬) হত্যার জট খুলতে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জামালপুরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) তদন্তের মাধ্যমে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তের জন্য মামলাটি হস্তান্তর করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন নকলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুশফিকুর রহমান। মুনছুর আলী জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কাচিহারা গ্রামের হানিফ উদ্দিন ফকিরের ছেলে।
গত ১২ ডিসেম্বর সকালে নকলা উপজেলার নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা নদীপাড় এলাকায় ফাঁকা কাঁচা রাস্তার ওপর থেকে বস্ত্রহীন অবস্থায় মুনছুরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। কিন্তু মরদেহের পরিচয় অজ্ঞাত থাকায় পুলিশ যুবকের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নাম পরিচয় জানতে পারেন। খবর পেয়ে পরদিন মুনছুরের বাবা হানিফ উদ্দিন ফকিরসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নকলা থানায় আসেন এবং মরদেহের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে মুনছুর আলী ফকিরকে শনাক্ত করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুনছুর আলীর ১০ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলে তিনি বরিশালের গার্মেন্টসকর্মী সালমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপর থকে ময়মনসিংহের ভালুকায় স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে বিভিন্ন যানবাহনে হেলপারের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ১১ ডিসেম্বর স্কয়ার মাস্টারবাড়ি মার্কেটে স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটার পর জরুরি কাজের কথা বলে বেরিয়ে যান মুনছুর আলী। রাত অনুমান ১০টার পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায় বলেও জানান তারা।
নিহত মুনছুরের স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, বিবাহের আগে মুনছুর ও তাঁর বন্ধু ড্রাইভার কালা মনসুর একই রুমে ভাড়া থাকতেন। সে সময় কালা মনসুরকে বেশ কিছু টাকা ধার দিয়েছিলেন মুনছুর। পরবর্তীতে টাকা চাইতে গেলে মুনছুরের সঙ্গে কালা মনসুরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিরোধে ভালুকা স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকার বেশ কয়েকজন ড্রাইভার কালা মনসুরের পক্ষ নিয়ে মুনছুরকে খুন করার হুমকি দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে নকলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা গত ১২ ডিসেম্বর নকলা উপজেলার ধনাকুশা নদীর পাড় থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নিহত নাম পরিচয় জানতে পারি। মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পিবিআই জামালপুরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মুনছুর আলী ফকিরের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনে ৭ টির মতো মামলা রয়েছে।