ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে আবেদন। মঙ্গলবার ইইউর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর অ্যাসাইলাম (ইউএএ) বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউনিয়নের ২৭টি দেশ এবং জোটের দুই সহযোগী দেশ সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েতে মোট পাঁচ লাখ ১৯ হাজার আশ্রয় আবদেন জমা পড়েছে। সংস্থাটির ধারণা, চলতি বছর দশ লাখ আশ্রয় আবেদন জমা পড়তে পারে। ২০১৫-১৬ সালের পর ইউনিয়নের দেশগুলোতে এটি আবেদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড হতে পারে।
২০১৫ সাালে জোটের দেশগুলোতে মোট ১৩ লাখ ৫০ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। আর ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার। ওই সময় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে সিরিয়া থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা বেড়েছিল।
এরপর ২০১৭ সালে তুরস্কের সাথে শরণার্থী বিষয়ে ইইউ চুক্তির পর আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা কমে এসেছিল। সেইসঙ্গে করোনা মহামারির সময়টিতে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা অনেক কম ছিল। এরপর ২০২২ সাল থেকে আবার বাড়তে থাকে এই সংখ্যা।
এদিকে, চলতি বছরের আশ্রয় আবেদনকারীদের মধ্যে এক চতুর্থাংশই সিরিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশী। ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরাও রয়েছেন তালিকায়।
বরাবরের মতো সিরিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগ জার্মানিতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যতো সিরীয় আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন তার ৬২ ভাগই জার্মানিতে।
ইউএএ বলছে, সম্প্রতি ইইউর দেশগুলোতে ইরান এবং রাশিয়া থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। চলতি বছর এবং আগামী বছরে ইউরোপের বহিঃসীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের আগমন বাড়তে বলে ধারণা করছে ইউরোপের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স।
সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, ২০২৩ সালে এবং আগামী বছরে পূর্ব ও সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরের পথ ধরে ইউরোপের বহিঃসীমান্তে আশ্রয়ের জন্য আসা লোকজনের সংখ্যা বাড়তে পারে। উত্তর আফ্রিকা থেকে ইতালি এবং তুরস্ক থেকে গ্রিস এবং সাইপ্রাসে পৌঁছানোর লক্ষ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এই পথটি ব্যবহার করে থাকেন।
এর আগে, গত মাসে সংস্থাটি বলেছিলে, ২০২৩ সালে ইউরোপে পৌঁছাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরের পথটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে এই পথ ধরে আসা মোট ৮৯ হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে আটক করা হয়েছে, যা তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১৫ ভাগ বেশি।