যশোরের বাঘারপাড়ায় যমজ সন্তান প্রসব করেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী (৩০)। গতকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার শ্রীপুর নতুন গ্রামের এক বাড়িতে তিনি একটি ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান প্রসব করেন। তবে দুই সন্তানের বাবার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি একাধিক ব্যক্তির নাম বলছেন। গ্রামের নামও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
বর্তমানে দুই নবজাতক ও তাদের মা যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মা এবং নবজাতকদের দেখাশোনার জন্য তিনজন নারী আনসার সদস্য নিয়োজিত আছেন। তবে সন্তানদের মায়ের কাছে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ তিনি সন্তানদের মারতে যাচ্ছেন।
ধলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, রোববার সকালে মানসিক ভারসাম্যহীন এক প্রসূতি শ্রীপুর নতুন গ্রামে এক বাড়িতে যমজ সন্তান প্রসব করেন। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। সন্তান প্রসবের পর এলাকাবাসী ওই প্রসূতিকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসক দুই নবজাতকসহ ওই মাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
তিনি আরও জানান, বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারী আনসার সদস্য দিয়ে মা ও সন্তানদের বাঘারপাড়া থেকে যশোরে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই দুই নবজাতককে দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকে চেষ্টা করেছিলেন।
ওই প্রসূতির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য সুমাইয়া আক্তার পলি বলেন, আমরা তিনজন আনসার সদস্য পালা করে প্রসূতি এবং নবজাতকদের দেখাশোনা করছি। বাচ্চাদের মায়ের কাছে দেওয়া যাচ্ছে না, মা বাচ্চাদের মারতে যাচ্ছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী বলেন, গতকাল রোববার বাঘারপাড় উপজেলায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক মা দুই সন্তান প্রসব করেন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। মা এবং বাচ্চাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তারা এখন সুস্থ আছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাচ্চা দুটি ও মায়ের সার্বিক খেয়াল রাখছে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে যশোর সমাজসেবা অধিদপ্তরকে ওই প্রসূতি ও বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য বলা হয়েছে। এরপর থেকে আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি। বাচ্চা দুটি এবং মা সুস্থ হলে পরে জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।