নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন (১৫) নামের এক রোহিঙ্গা কিশোরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেলে জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮১নং ক্লাস্টারের রুম ৩-এর দিল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার (১৭) ও ২৭নং ক্লাস্টারের রুম ৫-এর নুরুল হকের ছেলে ইউসুফ জালাল (১৬)।
ভাসানচর থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন কাঁকড়া ধরতে যাওয়া লোকজনদের সংবাদের ভিত্তিতে ভাসানচর থানা পুলিশ ২০ বেড হাসপাতালের পাশে বেড়িবাঁধের পাশ থেকে গলা ও হাত-পায়ের রগ কাটা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুলিশ মরদেহের পরিচয় জানতে পারে। ভুক্তভোগীর ভাই মোস্তাকিমের দায়ের করা হত্যা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রোহিঙ্গা সামছুল আলম ও ইউসুফ জালালকে গ্রেপ্তার করে। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি ছুরি ও ভুক্তভোগীর মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
ভাসানচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বেড়িবাঁধের কাছে ডেকে নিয়ে জাহিদ হোসেনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় তারা। এরপর ভুক্তভোগীর মুঠোফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত দুই রোহিঙ্গা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। আমরা তাদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছি। আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর ভাসানচরে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের ২১ মে পর্যন্ত ২০ ধাপে ভাসানচরে ৩২ হাজার ৪৩৫ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।